পৃষ্ঠাসমূহ / Pages

গায়ত্রী দেবী

 
Gayatri Devi
গায়ত্রী দেবী ছিলেন ভারতীয় সৌন্দ্যর্যর মুর্ত প্রতীক। পাঁচের দশকে "VOGUE" পত্রিকার সেরা দশ সুন্দরীর তিনি ছিলেন একজন। কিছুদিন আগে ৯০ বছর বয়েসে মারা যান, কুচবিহারের রাজপরিবারের মেয়ে ও জয়পুরের  রাজমাতা গায়ত্রি দেবী । তাঁর জন্ম লন্ডনে এবং পাড়াশোনা শান্তিনিকেতনে ও সুইজারলান্ডে । জয়পুরের রাজা সোয়াই মান সিংহের তৃতীয় স্ত্রী রাজপরিবারের রক্ষনশীল রীতিনীতি ভেঙ্গে মুক্ত বাতাস এনেছিলেন।

প্রেমের একাল সেকাল

গত এক দশকে যোগাযোগ বিজ্ঞানে (ইনফর্মেশন  TECHNOLOGY বা কম্যুনিকেশনে ) বিপ্লব ঘটে গেছে।  প্রেমের সঙ্গে যোগাযোগ বা কম্যুনিকেশন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত।  প্রেম পীড়ীত দুটি হৃদয় কথা বলার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকে। তাই প্রেমের ক্ষেত্রে যোগাযোগ একটা গুরুত্বপুর্ন বিষয়। কম্যুনিকেশনের বিপ্লবের সাথে সাথে তাই প্রেমের  রূপ ও চরিত্র পালটে গেছে । এই MOBILE, INTERNET'র  যুগে  কাছে না পাওয়ার, চোখে না দেখার সেই বিরহের সুখ বা দুঃখ, বেদনা আজকের প্রেমে নেই।  

সেকালে যোগাযোগ একটা বিরাট সমস্যা ছিল।  ইচ্ছামত যখন তখন যোগাযোগ করা যেত না, দেখা করা তো দূরস্থান। কারন তখন সামাজিক বা পারিবারিক বাধানিষেধ ছিল অত্যন্ত বেশি । রক্ষনশীল পরিবারের মেয়ে হলে তো  অবস্থা আরো কঠীন হত। তখন মেয়েরাও এখনকার মত এতোটা স্বাধীন বা স্বাধীনচেতা ছিল না। এমত অবস্থায়  প্রেমিক প্রেমিকার মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন হত পাড়ার পরিচিত ঘনিষ্ঠ কোন COMMON বৌদি বা বৌদিদের মাধ্যমে। এমতাবস্থায় পাড়ার বৌদিরা  একটা গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা পালন করতেন। তারা সেটা নিস্বার্থভাবে পালন করে দুই জনকে সাহায্য করতেন।  সেটা সব সফল  অসফল প্রেমের ক্ষেত্রেই দেখা যেত। অনেক সময় বৌদিদের বাড়িতে (দাদার অনুপস্থিতে) দুজনের সাক্ষাৎ হত এবং  সাক্ষাতে দুজনের তৃষিত হৃদয় জুড়াত। 

অনেক সময় বৌদির অভাবে অগত্যা প্রেমিকার মেয়ে বন্ধুর সাহায্যেও প্রেম-পত্রের আদানপ্রদান হত। এটা একটা বিপদজনক রাস্তা। কিন্তু কথায় বলে প্রেম বিপদ বোঝে না। ঊপায় না থাকলে সে বিপদে ভয় পায় না। একটা চিঠির জন্য তখন কি না করত। আজকাল সেসব কল্পনাও করতে পারবে না । কারন আজকাল আর তার প্রয়োজন হয় না। প্রেমপত্র জিনিসটা কি তাই বা কয়জন জানে। প্রেম পত্রের স্বাদ পাওয়া অনেক দুরের কথা।  প্রেম পত্র লেখার সময় অনেক ভাষার  প্রয়োগ হত যা আজকের  SMS, EMAIL 'র ভাষায় সবই হারিয়ে গেছে। একটি পত্রের আশায় আশায় দিনের পর দিন কেটে যেত। চিঠি পেতে দেরি হলে কত অভিজ়োগ  আনুজোগ মান  অভিমান ভরা থাকতো পরের  চিঠিতে। এখন সে সব কোথায় ? এখন শুধু একটি বোতাম টেপার  অপেক্ষা। সঙ্গে সঙ্গে দুজনে কানেক্ট হয়ে যাচ্ছে। টেকণোলোজী আমাদের  দুরত্ত্ব কমিয়েছে এবং সেইসঙ্গে আমাদের সুক্ষ  অনুভুতিগুলোকে মুছে দিয়েছে। এই টেক্‌ণোলোজী আমাদের অনেক কিছুই কেড়ে নিয়েছে। এখন সব কিছুই এত সহজলভ্য যে তা পাওয়ার বা জানার যে আকুলতা বা বেদনা তা এখন অনুভুত হয় না বা অনুভব করার প্রয়োজন হয়  না।  প্রেমের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এখন  বিরহ বলে কিছু নেই। বিরহের মধ্যে যে সুখ তা হারিয়ে গেছে। INTERNET, MOBILE 'র দৌলতে প্রেমের রুপ পালটে গেছে।  

আমরা উত্তম সুচিত্রা জুটির সিনেমা দেখে  অনুপ্রানিত হোতাম। পর্দায় উত্তম সুচিত্রার নির্মল প্রেম দেখে তখন প্রেমের পাঠ শুরু হত। সেগুলো তখন হৃদয় দিয়ে অনুভব করতাম এবং তরুন মনের কোনে রেখাপাত করতো। সমাজ বা পরিবার তখন এখনকার মত এতোটা উদার ছিল না , তাই  তখন প্রেমে বাধা বিপত্তি  অসুবিধা সবসময় থাকতো । এইসব কারনে দুজনের মধ্যে  সবসময় একটা  দুরত্ত্ব  থাকতো  এবং এই দুরত্বের কারনেই তখন প্রেমে গভীরতা ছিল । যা সহজে পাওয়া যায়না তা  পেলে সততই  মধুর হয়। তাই  সেদিনের সেই প্রেম ছিল মধুর এবং দীর্ঘস্থায়ী। 



উত্তম সুচিত্রা, ছবি - অগ্নীপরিক্ষা, "কে তুমি আমারে ডাকো"

বাংলা ভাষা

Bengali or Bangla (বাংলা ) একটি  Indo-Aryan ভাষা, যার উৎপত্তি সংস্কৃত ভাষা থেকে । বাংলা ভাষীর সঙ্খ্যা ২৩০ মিলিয়ন বা তারো বেশী । বিশ্বের সাবচেয়ে বেশি কথিত ভাষা। বাংলাদেশ , যার লোক সঙ্খ্যা ১২০+ মিলিয়ন, সকলেই বাংলায় কথা বলে। ভারতবর্ষের পশ্চিমবঙ্গের জনসঙ্খ্যা ৮০+ (২০০১ জনগননা) মিলিয়ন, সকলেই বাংলাভাষী। এছাড়া ভারতের  এবং  বিশ্বের নানা প্রান্তে প্রচুর বাংলা ভাষী আছেন, যারা বাংলায় কথা বলতে ভালবাসেন। বাস্তবে বাংলাভাষীর সঙ্খ্যা আমাদের আনুমানের  অনেক বেশী । এটা জেনে খুব ভাল লাগে।

কিন্তু দুঃক্ষ হয় যখন দেখি বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা বাঙ্গলা নিয়ে চর্চা করতে খুব একটা আগ্রহী নয় কারন এখন সবাই carrier Oriented course নিয়ে পড়াশুনা করতেই বেশি আগ্রহ। আজকাল কয়জন বাংলা নিয়ে উচ্চাশিক্ষা লাভ করে, তা হয়ত হাতে গোনা যাবে। বাংলা স্কুলে বা বাংলা নিয়ে উচ্চশিক্ষা এখন Last priority. এটা পশ্চিম বঙ্গের ছবি। বাংলাদেশে হয়ত এতটা নয় কারন সেখানে বাংলা জাতীয় ভাষা।

বর্তমান প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের বাঙ্গলা নিয়ে বিলাসিতা করার সময় নেই কিন্তু তার জন্য তারা বাংলা সাহিত্যের অমুল্য মনি মানিক্যের স্বাদ থেকে ছিরবঞ্চিত। তারা কোনোদিন রবিন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, বঙ্কিম সাহিত্যের স্বাদ পাবে না। বাঙ্গালীর ঘরে বাঙ্গালী হয়ে জন্মে বাংলা সাহিত্যের স্বাদ নিতে  অপারগ। এটা ভাবলে খারাপ লাগে। কিন্তু কিছু করার নেই। সময়টাই এরকম। এখন MBA এবং ENGINEERING এর চাপে বিশুদ্ধ বিজ্ঞান ও ভাষায় উচ্চশিক্ষার হার আগের তুলনায় অনেক কমে এসেছে। এইভাবে চললে ভবিষ্যতে বাংলা ভাষীর সঙ্খ্যা কমে আসবে তাহাতে কোনো সন্দেহ নেই।

বাংলাভাষীর আজকের সঙ্খ্যাটাই আমার এই ব্লগ লেখার কারন । তাছাড়া নিজের ভাষা যতো সহজে  প্রকাশ করা যায়, অন্যা ভাষায় তা হয় না। হয়ত আমার এই ব্লগ  কেও  পড়বে না , পড়বার উপযুক্তও হয়ত হবে না কারন আমি কনো  লেখক বা কবি নই। আমি আপনাদেরই মতো একজন।
 

একটি শিশির বিন্দু

আমার ভালোলাগা একটা কবিতা -
" বহু দিন ধ'রে বহু  ক্রোশ দূরে
বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে
দেখিতে গিয়েছি পর্বত মালা,
দেখিতে গিয়েছি  সীন্ধূ ।
দেখা হয় নাই চক্ষূ মেলিয়া
ঘর হতে শুধূ দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শিষের উপরে
একটি শিশিরবিন্দু ।।"
(  রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর  রচিত )